মিসওয়াক ব্যবহারের গুরুত্ব ও উপকারিতা

কারিমুল ইসলাম

মিসওয়াক করা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নাত। মিসওয়াক করার মাঝে রয়েছে ইহকালীন ও পরকালীন বহু কল্যাণ ও উপকারিতা। তাই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর প্রতি বিশেষ যত্নবান ছিলেন এবং উম্মতকেও এ ব্যাপারে বিশেষভাবে তাকিদ দিয়েছেন।

হযরত আবু উমামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, এমনটি কখনো হয়নি যে, জিবরাইল (আঃ) আমার নিকট এসেছেন আর আমাকে মিসওয়াকের আদেশ দেননি। এতে আমার আশংকা হচ্ছিল যে, (মিসওয়াকের কারণে) আমার মুখের অগ্রভাগ ছিলে না ফেলি। (মুসনাদে আহমদ)

অন্য হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, আমি যদি উম্মতের উপর (কষ্ট হবার) আশংকা না করতাম তাহলে প্রত্যেক নামাজেই মেসওয়াক করার আদেশ দিতাম।
(বুখারী, মুসলিম)

মিসওয়াক করার ফজিলত- মিসওয়াকের বহু ফজিলত হাদীসে বর্ণিত হয়েছে। এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, মেসওয়াক মুখের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যম ও আল্লাহর সন্তুষ্টির উপায় (নাসায়ী)

অন্য এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, মেসওয়াক করে যে নামাজ আদায় করা হয়, সে নামাজে মেসওয়াকবিহীন নামাজের তুলনায় সত্তরগুন বেশী ফযীলত রয়েছে।(বাইহাকী)

মিসওয়াকের কয়েকটি ইহকালীন ফায়দা- ১) দারিদ্র্যতা দূর হয়ে সচ্ছলতা আসে এবং উপার্জন বাড়ে। ২) পাকস্থলী ঠিক থাকে। ৩) স্মরণশক্তি ও জ্ঞান বাড়ে। ৭) অন্তর পবিত্র হয়। ৮) সৌন্দর্য বাড়ে। ৯) দাঁতের মাড়ি শক্ত হয়। ১০) মুখের দুরগন্ধ দূর হয় ইত্যাদি।

কবিতা

শত্রুর বোঝা
কারিমুল ইসলাম
দলে দলে পালাইছে সবে, মক্কাভূমি ছেড়ে
আব্দুল্লাহর ব্যাটা মহম্মদ আসিছে ফিরে
শত কষ্ট দিয়েছি তারে, বারোটি বছর ধরে
পাগল বলে হেসেছি কভু মেরেছি পাথর ছুড়ে
সিজদাবনত হলে নবী চাপাতে তাঁর ঘারে
উটের নাড়িভুড়ি, মায়া জাগেনি কভু অন্তরে
বংশহীন বলে কভু দিয়েছি বিদ্রুপের ঝুলি
কখনও কবিতার ভাষায় দিয়েছি গালাগালি
শেষে মারিবার তরে দাড়িয়েছিনু যে সময়
অতিষ্ঠ নবী রাতের আধাঁরে নিলেন বিদায়
সে আজ ফিরিছে, সঙ্গে হাজার হাজার মানুষ
কেবা পড়ে রইবে হেথায়, থাকিতে মান হুঁশ
কেবা ভোলে বারো বছরের কঠোর যাতনা
নিশ্চয় তাঁর মুখে উতলে উঠিবে প্রতিশোধের ফেনা
পথের মাঝে একটি বুড়ি পড়ল পিছিয়ে
মালপত্র সব ঝোলায় ভরে নিয়ে
সন্তানরাও ছেড়ে গেল, কেউ নিলনা সাথে
শেষে বুঝি মরতে হবে মহম্মদের হাতে
হঠাৎ কোথা হতে, সুদর্শন এক মানব
হাজির হল, বদনে ভরা নুরের চমক
কহিলেন, “বুড়ি মা! কোথায় যাবেন একা
মালপত্র সব গুছিয়ে কেন পথের ধারে রাখা ”
বলিলেন, “বাছা আসিছে মহম্মদ, নিষ্ঠুর অতি
প্রতিশোধ নিতে পারে, করতে পারে ক্ষতি,
তাই সবাই পালিয়েছে যেথা, আমিও যাবো সেথা
কিন্তু কাবু হয়েছি আমি, পিঠে বড় ব্যাথা ”
কহিলেন সে যুবা, ভয় কি মা আমি আছি সাথে
তোমার বোঝা তুলিয়া নিলাম নিজ পিঠে
দরদ মাখা কন্ঠে, শুধাইলেন বুড়ি মা
“কে বা তুমি বাছা? কে বা তোমার মা?”
বলিলেন,”মা, আগে চলুন, নিরাপদ স্থানে
তারপর দেব পরিচয়,দেব সবার সনে। ”
পৌছায়ে যথা স্থানে, বুড়ি কহিলেন সবারে
কেমনে আগুন্তক, উপকার করিল তারে
যুবকেরা অধোমুখে, মাফি চাই সমস্বরে
ভুল ভেবে তোমার ভয়ে এসেছি দেশান্তরে
অনেক কষ্ট দিয়েছি তোমারে নিঠুর হয়ে
আজ বুঝিলাম, কত মহান তোমার হিয়ে
হাস্য মুখে করলেন মাফ সবারে তিনি
বুড়িমাও লজ্জিত হলেন তাহাকে চিনি
কহিলেন, “শত্রুর বোঝা শিরে নেয় যে জন
সে জন রসুল, সন্দেহ করেনা আর মন। “